ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫ , ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে কি না, পুনর্বিবেচনা করবে বিএনপি শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ ছাত্রদলের আন্দোলন স্থগিত করেছেন ইশরাক পদত্যাগ করলেন কুয়েটের উপাচার্য অটোপাস দেয়া হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ ৫ সিদ্ধান্ত ঈদের আগেই আসছে নতুন নোট থাকছে না কোনো ব্যক্তির ছবি সাগরে রাষ্ট্রীয় তেল চুরি কুমিল্লা সীমান্তে ১৩ জনকে বিএসএফের পুশইন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা মানবিক করিডরের নামে দেশকে যুদ্ধে নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়- দুদু টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতি জরুরিÑ পরিবেশ উপদেষ্টা হবিগঞ্জে দুর্ঘটনায় ২ যুবক নিহত, মহাসড়ক অবরোধ ফ্যাসিস্টের দোসর কিবরিয়া হোসনে আরা বহাল তবিয়তে সারাদেশে একই দামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট জুলাই থেকে কার্যকর ডেঙ্গুতে একদিনে ৪৬ জন হাসপাতালে ভর্তি, করোনায় সংক্রমিত ৬ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি খামারিরা দিশেহারা আবারও পিএসএল থেকে ক্রিকেটার নিলো আইপিএল উইন্ডিজের বিপক্ষে ইংলিশ দল থেকে ছিটকে গেলেন আর্চার ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন ক্যাবরেরা
এনআরবি ইসলামিক লাইফে দুর্নীতি

ফ্যাসিস্টের দোসর কিবরিয়া হোসনে আরা বহাল তবিয়তে

  • আপলোড সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ১২:১৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ১২:১৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
ফ্যাসিস্টের দোসর কিবরিয়া হোসনে আরা বহাল তবিয়তে
* ফ্যাসিস্টের আরেক সহযোগী শাহজামাল এখনো সিইও পদে
* ওভারসিজ কমিশনের নামে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ
* ক্যাশ ইন হ্যান্ডের নামে অর্থ আত্মসাৎ
* একক প্রিমিয়ামকে মেয়াদি বীমা দেখিয়ে ব্যাপক তহবিল লোপাট
* নামে বে-নামে কমিশনের অর্থ আত্মসাৎ

কার্যক্রম নিষিদ্ধ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতন হলেও এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান পদে বহাল তবিয়তেই রয়ে গেছেন হাসিনার ঘনিষ্ঠ দোসর সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইতালি আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কিবরিয়া গোলাম মোহামাদ ওরফে জি এম কিবরিয়া। ফ্যাসিস্টের আরেক দোসর কিবরিয়ার স্ত্রী সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হোসনে আরা বেগমকে কাগজে কলমে কোম্পানির ওভারসিজ এজেন্সি ডিরেক্টর বানিয়ে কমিশনের নামে পাচারের মাধ্যমে লুটে নিয়েছে বিপুল অংকের অর্থ। যার প্রধান সহযোগী কোম্পানির বিতর্কিত সিইও ও আওয়ামী লীগের আরেক অর্থদাতা শাহ্ জামাল হাওলাদার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ফ্যাসিস্টের অর্থায়নকারী জিএম কিবরিয়া ও তার স্ত্রী হোসনে আরাকে ২০২১ সালে উপঢৌকন হিসেবে এই লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটির লাইসেন্স দেয় পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। লাইসেন্স পেয়েই এনআরবি ইসলামিক লাইফ থেকে নানা উপায়ে অর্থ বের করত ফ্যাসিস্টের অর্থায়নকারী গোলাম কিবরিয়া। যে কারণে প্রতিষ্ঠার তিন বছরের মাথায় নানা অনিয়মে খাদের কিনারে এসে পড়েছে কোম্পানিটি। ঝুঁকির মুখে পড়েছে বীমা গ্রাহকদের আমানত। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) তদন্তেও উঠে এসেছে কোম্পানিটির নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের চিত্র।
তবে অনুমোদনহীন বীমা পরিকল্প বিক্রি, আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, পলিসি তামাদির উচ্চহার, ক্যাশ ইন হ্যান্ডের নামে অর্থ আত্মসাত, একক প্রিমিয়ামকে মেয়াদি বীমা দেখিয়ে ব্যাপক তহবিল লোপাট, সম্পদ বিনিয়োগে অনিয়মসহ নানা দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারির বোঝা নিয়ে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও পদে বহাল তবিয়তেই আছেন শাহ্ জামাল হাওলাদার। অথচ তার বিরুদ্ধে সবগুলো অভিযোগের সত্যতা উঠে এসেছে খোদ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তদন্ত প্রতিবেদনে। এসব অভিযোগে কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহী পদে শাহ্ জামাল হাওলাদারের পুনঃনিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন না দিয়ে নাকচ করেছে আইডিআরএ। পুনঃনিয়োগের প্রস্তাব নামঞ্জুরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ২০২৪ সালের ১০ জুন কোম্পানিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠান আইডিআরএ’র পরিচালক আহম্মদ এহসান উল হান্নান।
আইডিআরএ’র ওই চিঠিতে শাহ জামাল হাওলাদার কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ‘চরম ঝুঁকিপূর্ণ এবং দেউলিয়া পর্যায়ে নিয়ে গেছেন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া তিনি আর্থিক অনিয়ম ও অপচয়ের মাধ্যমে কোম্পানি ও গ্রাহক স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করেছেন, একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন বলে আইডিআরএ উল্লেখ করেছে। আইডিআরএ’র ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মো. শাহ জামাল হাওলাদারের প্রত্যক্ষ ব্যবস্থাপনায় বীমা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে। যা কোম্পানি এবং বীমা গ্রাহকদের স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলেছে। তবে আইডিআরএ’র ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করেন শাহ জামাল হাওলাদার। রিটের শুনানি নিয়ে ২০২৪ সালের ২৫ জুলাই রুলসহ আইডিআরএ’র সিদ্ধান্তে ৬ মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শাহ জামাল হাওলাদারের মুখ্য নির্বাহী পদে দায়িত্ব পালনে ৬ মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি করে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। তবে ওই স্থগিতাদেশের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি।
বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে কী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে আইডিআরএ’র উপ-পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সোলায়মান জানান, বিষয়টি নিষ্পত্তিতে আইডিআরএ আইনি সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। শিগগিরই আদালতে এটি শুনানি হবে বলে আশা করছি। আইডিআরএ যেসব কারণে মুখ্য নির্বাহী পদে শাহ জামাল হাওলাদারের পুনঃনিয়োগের প্রস্তাব নামঞ্জুর করছে আদালতে সেসব যুক্তি উপস্থাপন করা হবে।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যানকে পাঠানো আইডিআরএ’র ১০ জুন ২০২৪ এর ওই চিঠিত বলা হয়, সূত্র উল্লিখিত স্মারকে বীমা আইন ২০১০ এর ৮০ ধারা এবং বীমা কোম্পানি মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা-২০১২ এর আলোকে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে মো. শাহ জামাল হাওলাদারকে ৩ (তিন) বছরের জন্য পুনঃনিয়োগ অনুমোদনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করে। আবেদনের সাথে সংযুক্ত তথ্যাদি ও প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বিগত মেয়াদে মো. শাহ্ জামাল হাওলাদার এর প্রত্যক্ষ ব্যবস্থাপনায় বীমা আইন ২০১০ এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে নিম্নোক্ত কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে বিধায় কোম্পানি ও বীমা গ্রাহক স্বার্থ হুমকির মুখে পড়েছে: (ক) বীমা আইন ২০১০ এর ৬২ ধারা এবং ‘লাইফ বীমাকারীর ব্যবস্থাপনা ব্যয় সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণী বিধিমালা ২০২০’ অনুযায়ী অনুমোদিত সীমার অতিরিক্ত ২১.১৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে যা অনুমোদিত সীমার ১.৪৮ গুণ বেশি। (খ) বীমা আইন ২০১০ এর ১৬ ধারা লঙ্ঘন করে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে বীমা পরিকল্প (সুরক্ষিত দ্বিগুণ প্রদান এক কিস্তি বীমা) বাজারজাত করেছে; (গ) ‘লাইফ বীমাকারীর ব্যবস্থাপনা ব্যয় সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণী বিধিমালা ২০২০’ অনুযায়ী দ্বিগুণ প্রদান এক কিস্তি বীমার অনুমোদিত সীমা হবে ৫% যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১.২৭ কোটি টাকা কিন্তু কোম্পানি বিধিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অনুমোদিত সীমা প্রদর্শন করেছে ৪৫% হতে ৯৫% পর্যন্ত যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১২.০২ কোটি টাকা। ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে এ তিন বছরে কোম্পানি মোট ১০.৭৫ কোটি টাকা বেআইনীভাবে অতিরিক্ত অনুমোদিত সীমা প্রদর্শন করে ব্যয় করে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করে বিভ্রান্ত করেছে এবং এর মাধ্যমে কোম্পানিকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করা হয়েছে। ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা নির্ধারণে কোম্পানি মারাত্মক অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণ করেছে যার জন্য কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা দায়ী। (ঘ) গত তিন বছরে বীমা গ্রাহকদের নিকট হতে সংগৃহিত প্রিমিয়াম বাবদ প্রায় ৮১.৫২ কোটি টাকার অধিকাংশ অর্থই ব্যয় করেছে। ফলে লাইফ ফান্ডে মাত্র ১.২০ কোটি টাকা আছে। বীমা গ্রাহকদের বীমা দাবি পরিশোধে কোম্পানির কোন বিনিয়োগ নেই। এর জন্য অনেকাংশে দায়ী কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা। ২। এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড কর্তৃক প্রস্তাবিত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহ জামাল হাওলাদার বিগত মেয়াদে আর্থিক অনিয়ম ও অপচয়ের মাধ্যমে কোম্পানি ও গ্রাহক স্বার্থের পরিপন্থি কাজ করেছে। তাছাড়া তিনি কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরিত প্রতিবেদনে ভুল তথ্য প্রদান করে বিভ্রান্ত করেছেন। সার্বিকভাবে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা চরম ঝুঁকিপূর্ণ এবং দেউলিয়া পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ০৩। এমতাবস্থায়, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে মো. শাহ জামাল হাওলাদার এর পুনঃনিয়োগের প্রস্তাব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নামঞ্জুরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ২০২১, ২০২২ ও আইডিআরএ পাঠানো অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ২০২৩ বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অনুমোদনহীন বীমা পরিকল্প বিক্রিসহ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, পলিসি তামাদির উচ্চহার, ক্যাশ ইন হ্যান্ডের নামে অর্থ তছরূপ, একক প্রিমিয়ামকে মেয়াদি বীমা দেখিয়ে ব্যাপক তহবিল লোপাট, সম্পদ বিনিয়োগে অনিয়মসহ নানা দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির ১৮ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থেকে দু’দফায় মোট ৭ কোটি টাকা খরচ করে ফেলা হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত পুনর্ভরণ করতে পারেনি কোম্পানির সিইও।
সিইও’র নিয়মবহির্ভূত কর্মকান্ডের দায়ে এনআরবি ইসলামী লাইফের পরিচালকদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর মতো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষিত-অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিবছর যে পরিমাণ প্রিমিয়াম আয় হয়েছে তার অধিকাংশ এসেছে অনুমোদনহীন বীমা পরিকল্প সুরক্ষিত দ্বিগুণ প্রদান এক কিস্তি বীমা থেকে। যার মেয়াদকাল ৬, ৮, ১০, ১২, ও ১৫ বছর হলেও প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে ৬ বছর মেয়াদে একক প্রিমিয়াম গ্রহণ করে চলেছে। কোম্পানি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০২১ সালে এই পরিকল্প থেকে একক প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ৩০ লাখ টাকা। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালে এই পরিকল্প থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা হয় প্রায় ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। গত তিন বছরে এই পরিকল্প থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা হয় প্রায় ২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এই বিশাল পরিমাণ প্রিমিয়ামের উপর জীবন বীমা ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণী বিধিমালা-২০২০ অনুযায়ী এক কিস্তি বীমায় ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা ৫ শতাংশ হারে ব্যয় করার কথা ছিলো ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। কিন্তু আইডিআরএ’র নির্দেশনা অমান্য করে সিইও শাহ জামাল হাওলাদারের নির্দেশনায় কৌশলে ডাটা জালিয়াতির (একক বীমা প্রিমিয়ামকে মেয়াদি বীমায় রূপান্তর) মাধ্যমে কখনো ৪৫ শতাংশ আবার কখনো তার চেয়েও বেশি হারে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের নামে গ্রাহকের অর্থ পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১ম বর্ষ প্রিমিয়াম, নবায়ন ও গ্রুপ বীমা থেকে মোট সংগ্রহ করে ৮১ কোটি টাকা। এরমধ্যে ২০২১ সালে ১ম বর্ষ প্রিমিয়াম আয় করে ৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ২০২২ সালে ১ম বর্ষের প্রিমিয়াম ২৭ কোটি টাকাসহ নবায়ন ও গ্রুপ বীমা মিলে আয় করে ২৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালে একইভাবে ১ম বর্ষের প্রিমিয়াম ৩৬ কোটি টাকাসহ নবায়ন ও গ্রুপ বীমা মিলে ৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করে।
উল্লেখ্য, গত তিন বছরে ১ম বর্ষ প্রিমিয়াম, নবায়ন ও গ্রুপ বীমা আয় ৮১ কোটি টাকার মধ্যে অনুমোদনহীন বীমা পরিকল্প সুরক্ষিত দ্বিগুণ প্রদান এক কিস্তি বীমা থেকে এককালীন প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা। এনআরবি ইসলামিক লাইফ এ যাবত ৮১ কোটি টাকা ব্যবসা করলেও প্রতিষ্ঠানটি লাইফ ফান্ড সন্তোষজনক অবস্থায় নিতে ব্যর্থ হয়েছে। উল্টো কোম্পানি একক কিস্তি বীমা পরিকল্প থেকে এককালীন হারে যে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করেছে তার সবটুকুই ডাটা জালিয়াতির করে ঘাটতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ফলে বর্তমানে কোম্পানি চরম তারল্য সংকটে রয়েছে। কোম্পানির বহিঃনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান মাহফেল হক এন্ড কোম্পানি ২০২২ সালে তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের এম্ফেসিস অব ম্যাটার হেডে ২০২১ ও ২০২২ সালে মোট ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা ক্যাশ ইন হ্যান্ডে বাস্তবে পাননি বলে উল্লেখ করেন। প্রতিষ্ঠানটির এই আর্থিক অনিয়মের ব্যাপারে কোম্পানির ক্যামেলকো বিএফআইইউতে এসটিআর-এসএআর না করায় বিস্মিত হয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স